আরও ৪৮ ঘন্টা অবরোধ বিএনপির, নতুন কর্মসূচি জামায়াতের

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

শুক্রবার ও শনিবার দুই দিনের বিরতি দিয়ে রোববার থেকে ফের কর্মসূচির ডাক দিলো বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। আগামী ২৬ ও ২৭ নভেম্বর (রোব ও সোমবার) দেশব্যাপী টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ পালন করবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।

এদিকে, চলমান অবরোধ কর্মসূচি শেষে আরও দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী রোববার (২৬ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।

আজ ভোরে বিএনপির ডাকা ষষ্ঠ দফার দুই দিনের অবরোধ শেষ হচ্ছে। এর আগেই নতুন অবরোধের ঘোষণা এল।

নতুন করে অবরোধের ঘোষণা দিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল বাতিলের দাবিতে রোববার ভোর ছয়টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত (২৬ ও ২৭ নভেম্বর) অবরোধ পালিত হবে।

রিজভী তার বক্তব্যে সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, দেশজুড়ে বিএনপি, সহযোগী সংগঠন এবং সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে নির্বিচারে। বিভিন্ন জায়গায় শাসক দলের পক্ষ থেকে বাসে আগুন দেওয়া হচ্ছে। তাদের লোকজনও ধরা পড়ছে। কিন্তু তাদের ছেড়ে দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরে এনে দোষী প্রমাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এভাবে উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে।

রিজভী বলেন, এই জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে শামিল হওয়া এখন নাগরিক দায়িত্ব। সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ আন্দোলনে শামিল হয়েছে। এই দেশে অতীতের ইতিহাসে দেখা গেছে, এখানে জুলমকারী, অন্যায়কারী বেশি দিন থাকতে পারে না।

রিজভী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি এবং তাদের অঙ্গ সংগঠনের ৪১০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলায় ১৭ জন আহত হয়েছেন। তিনি এসব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলা ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে দলটি। এর আগে, ছয় দফা অবরোধ ও দুই বার হরতাল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।

২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ করতে না পারার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত অবরোধ, দ্বিতীয় দফায় ৫ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ৭ নভেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত অবরোধ, তৃতীয় দফায় ৮ ও ৯ নভেম্বর, চতুর্থ দফায় ১২ ও ১৩ নভেম্বর, পঞ্চম দফায় ১৫ ও ১৬ নভেম্বর এবং ষষ্ঠ দফায় ২২ ও ২৩ নভেম্বর অবরোধ ঘোষণা করা হয়। গত ১৯ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে ২১ নভেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতালের ডাক দেয় দলটি।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী রোববার (২৬ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) পর্যন্ত সড়ক, নৌ ও রেলপথে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে জামায়াত।

বিবৃতিতে এ টি এম মাছুম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সাজানো প্রহসনের নির্বাচন করে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা অতীতের মতো আবারও একতরফা ভোটারবিহীন পাতানো নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বিরোধী দলের মতামতকে অগ্রাহ্য করে গণতন্ত্রহরণকারী আওয়ামী সরকার অনুগত নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ফরমায়েসি তফলিস ঘোষণা করিয়েছে। সরকারের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশনের একতরফা তফসিল জাতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ঘোষিত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করে আন্দোলনকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে আগামীকাল শুক্র ও শনিবার বিরতি দিয়ে আবারও টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সপ্তম দফায় এ ঘোষণা দেন।

এর আগে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের পর ২৯ অক্টোবর হরতাল দেয় বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো।

এরপর ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে দলটি। পরবর্তী সময়ে ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় এবং ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায়, ১১ ও ১২ নভেম্বর চতুর্থ দফা, ১৫ ও ১৭ নভেম্বর পঞ্চম দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করে দলটি। সর্বশেষ ষষ্ঠ দফায় গত ২২ ও ২৩ নভেম্বর অবরোধ দেয় তারা।