গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমি যেসব উদ্যোগ নিয়েছি কোনোটিই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য নিইনি। সেটা গ্রামীণ ব্যাংক কিংবা অন্য বড় কোনো প্রতিষ্ঠান, যেটাই হোক না কেন।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে তৃতীয় শ্রম আদালতে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে করা মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, অভিযোগের বিষয়ে যা বলার সেটি লিখিতভাবেই বলেছি, যাতে সবাই দেখতে পারে।
মানুষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে মুনাফা করার জন্য। আমরাও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করে বড় করেছি। কিন্তু এসব কার্যক্রমকে আমরা সামাজিক ব্যবসা বলি। যেখানে ব্যবসার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপকার হয়। এর মূল বিষয়টি হলো, এসব ব্যবসায় যিনি বিনিয়োগ করছেন তিনি কোনো মুনাফা নেবেন না। কাজেই আমি হচ্ছি এই সামাজিক ব্যবসার প্রবক্তা। বিশ্বব্যাপী এটি আমি প্রচার করার চেষ্টা করেছি। এসব কার্যক্রমের ভেতরে আমার ব্যক্তিগতভাবে মুনাফা করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।
বাকিরাও কোনো ধরনের অপরাধ করেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে যারা আছেন তারাও মুনাফা অর্জনের জন্য দায়িত্ব পালন করেননি। মানুষের উপকার করাটাই আমাদের লক্ষ্য। কোনোটাতেই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হব এ রকম কোনো উদ্দেশ্য আমাদের মধ্যে ছিল না। সুতরাং যেটার উদ্দেশ্য লাভবান হওয়া না সেটা আমি কার জন্য নেব, কাকে দেব?
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মালিক মুক্ত থেকেছেন দাবি করে ড. ইউনূস বলেন, আমার উদ্দেশ্য ছিল আমি মালিকানা মুক্ত থাকব। সে জন্য কোনো কিছুতেই আমি মালিক হইনি। আমি সেটাই ফলো করে যাচ্ছি। যেখানে আমি নিজেই মালিকানামুক্ত থাকতে চাই সেখানে আমি আরেকজনের কাছ থেকে কেড়ে আনব কেন?
প্রসঙ্গত, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে বাদী হয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম এবং মো. শাহজাহানকে আসামি করা হয়।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইন ৪ এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।