আজিজুল কায়সারের একগুচ্ছ কবিতা

::
প্রকাশ: ২ years ago

নিরব অসন্তুষ্টি

অনেক রয়েছে তবুও তা যেন নিতান্তই অতি তুচ্ছ,
অসন্তুষ্টিতে ভরপুর আজ শ্রেষ্ঠকুলের হৃদয় গুচ্ছ।

সুদর্শনা ক্ষতবিক্ষত অভিযোগ করবে কার কাছে,
শ্রেষ্ঠ কুলের যুবকেরা ছুটছে মরীচিকার পিছে পিছে।

স্বাচ্ছন্দের সান্নিধ্য খুঁজে দিগন্ত জোড়া প্রকৃতিকে ঘিরে,
প্রকৃতিপ্রেমীরা সকলেই হতাশ, রয়েছে অসন্তুষ্টির ভিড়ে।

শিক্ষাঙ্গনের অনিয়ম গুলো চলছে কিসের ইঙ্গিতে,
শিক্ষা দীক্ষায় হায় হায় বুঝি ভুলে ভরা সব ভঙ্গিতে।

অযোগ্যরা শিক্ষক হয়ে যায় ঘুস মেশিনের জোরে,
মেধাবীরা হয় সুযোগ বঞ্চিত ভালো হবে কি করে।

অনাচার অনিয়মের দৃশ্যগুলো আজ নির্লজ্জ প্রকাশিত,
সম্মানের ভয়ে আড়ালে থাকাটা নয়তো ভালোয় নিহিত।

কবি চায় লিখবে বসে সুদর্শনার আলোকিত জোসনায়,
অশুভ কালো মেঘ এসে গর্জন দেয় কবির স্বাধীনতায়।

হুঁশ ফেরাও মানুষ

বিশেষ কোনো ক্ষতি নেই যদি ঠকে যাও কখনো তুমি,
ছোট্ট জীবন শেষ হয়েই যাবে পড়ে থাকবে শুধু ভুমি।

প্রতারণা করে ক্ষণিকের জন্য তুমি জিততেও পারো,
কখনো তুমি কাঁদাতেও পারো হক নষ্ট করে কারো।

ক্ষণিকের শান্তিকে ভেবনা তুমি স্বর্গ সুখের ঠিকানা,
নিঃশ্বাসেরও রয়েছে একদিন পরিসমাপ্তির সীমানা।

দীর্ঘশ্বাসটা নিঃশ্বাসেই আটকাবে নির্দিষ্ট কোন ক্ষণে,
অতিরঞ্জিতটুকু ঠাঁই দিওনা তুমি ক্ষণিক শান্তির মনে।

সুদর্শনাকে পায়ে ঠেলে তুমি করছো কেন অবহেলা,
নিমিষেই হারিয়ে যাবে কিন্তু কৃত্রিম সুখের সারা বেলা।

যৌবনটাকে হারিয়ে ফেলেছ সুখ আহলাদের মাঝে,
অভিজ্ঞতার ছিটেফোঁটা এবার লাগাও ভালো কাজে।

দীর্ঘদিনের অর্জিত জ্ঞানের অনূভুতি জড়ো করে,
সমস্ত জীর্ণতা দূর করে ফেলো মনটাকে বড় করে।

কাউকে ঠকিয়ে মনে করেছো কি জিতে গেছে মনোহর,
হতেও পারে সেটা তোমার ব্যর্থ আলিঙ্গনের শেষ প্রহর।

সময়ের ভাবনা

কলমটির কাজ চলতেই থাকে যতক্ষণ রয় কালিতে,
প্রয়োজন শেষে মোরা তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেই মাটিতে।

মুখটা দিয়ে শুধু বললেই হবেনা আদর্শ দেখাও কর্মতে,
আমার প্রয়োজন তুমি হলে তোমার প্রয়োজন আমাতে।

রৌদ্রে কম হলেও ছাতাটির প্রয়োজন বেশি বৃষ্টিতেই,
চেষ্টা করেই দেখো পারবে তুমি নতুন কিছু সৃষ্টিতেই।

দেশপ্রেমিক হতে ভয় পেয়োনাগো তোমার দেশের তরে,
দেশটাকে গড়তে শুরু কর আগে ছোটখাটো কিছু করে।

মানুষের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়োনা অল্পতে হয়ে যাও তুষ্ট,
পারলে কিছু ভালো করে যাও না পারলে করোনা নষ্ট।

মানুষ তুমি হেঁটেই দেখো মানবতার ঐ পথটি ধরে,
প্রতিবেশীরাই পরম বন্ধু পাশে দাঁড়াও আপন করে।

চেষ্টার পথে এগিয়ে চলো মানুষের কল্যাণে কিছু করে,
শ্রেষ্ঠ মোরা মানব জাতি সকলেই মোরা সকলের তরে।

প্রিয় মানচিত্রের হাহাকার

সহসাই বেজে চলেছে অশনি সংকেতের ডামাডোল,
গভীর রাতে সুরেলা বাঁশির আওয়াজ শুনিনা আর।

যান্ত্রিক শব্দ দূষন, বাতাস ভারী কীটনাশকের গন্ধে,
হৃদরোগ ছেয়ে গেছে মানচিত্রের কোনায় কোনায়।

অনিয়মের বাধ্যবাধকতা মেনে নিয়েছে প্রকৃতিও,
তান্ত্রিক ষড়যন্ত্রের শিকার সুদর্শনার প্রান্তিক জনতা।

নদীও পরিণত হয়েছে দখলদারিত্বের হোলিখেলায়,
বালু খেকো গুরুর, ভেকুর নির্মমতায় পদ্মা যমুনা।

নাঙ্গল জোয়াল কাঁধে কৃষকের মাঠে যাওয়ার সুদৃশ্য,
আজ অতীত গল্পের মতো দেয়ালে আটকানো ছবি।

স্নেহ মমতা ও ভালোবাসার সুদৃশ্য গুলো এখন বিরল,
কৃষাণিরা গামছায় পুটলী বেঁধে খাবার নেয়না আর।

পারদর্শী সেই, যে আজ বেসুরে মিথ্যার বাঁশি বাজায়,
মিথ্যার জুড়িদাররা গড়ে দিচ্ছে মিথ্যুকের মজবুত ভীত।

লাইট ইয়ার্স গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে হিংসার বিষবাষ্প,
সততা আদর্শ মূল্যহীনের দোড়গোরায় স্থির পড়ে রয়।

নম্রতা ভদ্রতা নাকি দুর্বল লোকেদেরই মানায় বেশি,
তীক্ষ্ণ অপপ্রচারের বিদ্ধ তীরে ক্ষতবিক্ষত সভ্য সমাজ।

সুদর্শনার মানচিত্রে লেপ্টে রয়েছে ভন্ডামীর পদচিহ্ন,
লাল সবুজের পতাকায় Real Respect শুধুই দিবসে।

অফিস আদালত যত্রতত্র দেশপ্রেম বিক্রির হাট বাজার,
কোন গন্তব্যে ছুটছি মোরা, কথা ছিল কোথায় যাবার,

সুদর্শনার সোনার বাংলা জেগে উঠবেই আর একবার,
নতুন প্রজন্ম রুখবেই এবার মানচিত্রের হাহাকার।

দ্বারিয়াপুর, পাবনা
২৯. ০১. ২০২৩ খ্রীস্টাব্দ


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভার্চুয়াল মতামত ও অন্যান্য ভিডিও পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।


Public Reaction একটি মতামতভিত্তিক সাইট।
মূলধারার সংবাদ এবং মতামত, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতাসহ সৃজনশীল লেখা প্রকাশের একটি মুক্তমাধ্যম এটি। লিখুন আপনিও।
ইমেইল: opinion2mail@gmail.com, info@publicreaction.net