জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় জাতি এখনো উজ্জীবিত ও ঐক্যবদ্ধ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগে একটা মারলে ৪টা দাঁড়াতো, এখন একটা মারলে ৪০টা দাঁড়াবে।
বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিএনপি, জামায়াতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এ বৈঠকে অংশ নেয়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা যেটা মনে করছে ঠান্ডা হয়ে গেছি, ঠান্ডা আমরা হই নাই। আমরা সেই সতেজ। আমরা দেখেছি পুলিশ বলেছিল, স্যার একটা মারি তো চারটা দাঁড়ায় যায়; এখনও চারটা না, ৪০টা দাঁড়াবে এবার। এ জাতি মরে নাই, দুর্বল হয় নাই, সবল আছে।
তিনি বলেন, আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তারা। অগাস্টের ৫ তারিখে যে উত্তেজনা এবং শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমার শত্রুর মোকাবিলা করেছি; আমাদের ছাত্র-জনতা বুক পেতে দিয়েছিল, জীবন দিয়েছিল; সে লক্ষ্যে কোথাও কোনো চিড় ধরে নাই, ফাটল ধরে নাই।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা এখনও সেই জাতি, যে জাতি ৫ আগস্ট থেকে যাত্রা করেছিলাম, স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় দিয়ে। সেই জাতি এখনও সজাগ আছে, মজবুত আছে।
তিনি বলেন, আমরা এখানে এক হয়েছি জানিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া এটা আমাদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার কোনো অবকাশ, কোনো শক্তির নেই। যত ষড়যন্ত্র করুক, যত অপপ্রচার করুক, যত কিছু করুক, আমাদের থেকে এটা ছিনিয়ে নিতে পারবে না। কারণ, আমাদের রক্ত এখনও শুকায় নাই। দেয়ালে দেয়ালে যে লেখাগুলো আছে, আসা যাওয়ার পথে রোজ পড়েন, সেগুলো মুছে যায় নাই, এখনও দগদগ করছে। সেটা আমাদের বুকেও দগদগ করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের প্রশংসা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা সেই শক্তিমান জাতি, আমরা লড়াই করব। আমরা শুধু হাস্যকর যে প্রচেষ্টাগুলো হচ্ছে, সেগুলো তুলে ধরার জন্য আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা সুন্দরভাবে সেগুলো তুলে ধরেছেন। নানা মত নানা পদ সেগুলো থাকবেই, যে কোনো জাতির মধ্যে থাকে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো মতভেদ আমাদের নেই।
তিনি বলেন, যেভাবে আপনারা ৫ আগস্টের পর থেকে একত্র হয়ে চলেছেন, সেই মজবুত ঐক্য আমাদের আছে, থাকবে। সেটা আমরা জনগণকে জানিয়ে দিলাম আজকে। আমরা তো মরে যাই নাই, এ জাতি মজবুত অবস্থাতেই আছি। মজবুত অবস্থানে আছি ও থাকব। কেউ আমাদের ঐক্য ছিনিয়ে নিতে পারবে না। কেউ আমাদের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না।
সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি(এনপিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), গণঅধিকার পরিষদ(জিওপি) নেতারা যোগ দেন।