বিয়ে একটা সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
সামাজিক ভাবে বিয়ের যেমন গুরুত্ব অপরিসীম তেমনি বিয়ের মাধ্যমে সূচিত হয় দুইটি পরিবারের মধ্যে ভালোবাসার বন্ধন।
তবে,বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এই বিয়েকে নিয়েই যেন বাড়াবাড়ির কমতি নেই।
শত পদের আহারের আয়োজন,বহু মূল্যের যৌতুক বিনিময় এই ঘটনা গুলো হরহামেশা দেখা যায়।
নানা রকম উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করে দেনাপাওনার বহু রীতিনীতি প্রচলিত আছে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়। যেমন,
নতুন বিবাহিত নারীর শ্বশুর বাড়িতে ঈদে জামাকাপড় দেওয়া, কুরবানির পশু দেওয়া,বাচ্চার আকিকায় গরু-ছাগল দেওয়া,মৌসুমি ফল নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
সমাজের মধ্যবিত্ত বা নিন্মবিত্ত মানুষের এমন রীতিনীতি পালন করতে গিয়ে যেন মরণ ফাঁদে পড়তে হয়।
অভাবের সংসার চালাতে যেখানে মানুষের হিমশিম খেতে হয় তখনি মাথার উপরে আসে এমন হীন সমাজের বানানো রীতিনীতি।
যথার্থ উপহার সামগ্রী মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে পৌঁছাতে না পারলে মেয়েকে সইতে হয় অসহনীয় যন্ত্রণা, যৌতুকের জন্য নির্যাতন,হত্যার মতো বহু ঘটনা আমরা নিত্য দেখতে পাচ্ছি।
কুরবানির ছাগলের জন্য স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে এমন খবর,যৌতুকের জন্য পিটিয়ে হত্যা এইসব ঘটনাতো অল্প কিছু দিন আগেরই।
তবে,সমাজের এমন বানানো নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে পরিবর্তনের কেতন উড়াতে চাচ্ছেন চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার গণিপাড়ার গণিপাড়া সমাজ উন্নয়ন পরিষদ নামক সংগঠনটি।
গণিপাড়া নামক স্থানটির মানুষের মধ্যে সচেতনতা আনয়নের লক্ষ্যে কিছু সামাজিক চলমান রীতিনীতি পরিবর্তন করার জন্য নিয়ম বেঁধে দেওয়া হলো।
এই নিয়মটি সমাজে বসবাসরত বর ও কনে উভয়ের পরিবারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
যে নিয়ম নীতিগুলি বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে গণিপাড়া সমাজ উন্নয়ন পরিষদ তার মধ্যে কতক হলো:-
১.মহরম উপলক্ষ্যে কোনো প্রকার খানাপিনা আদান-প্রদান নিষেধ।
২.পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষ্যে কোনো প্রকার খানাপিনা আদান-প্রদান নিষেধ।
৩.কোরবানির কোনো পশুর আদান-প্রদান হবে না।
৪.ঈদে জামাকাপড় ও আকিকার সময় পশু এবং জামাকাপড় প্রদান করা হবে না।
নিঃসন্দেহে বলা যায় গণিপাড়ার এমন কর্মকাণ্ড দেশের সকল সমাজে পালিত হলে সমাজের নানা অনিয়ম দূর করা সম্ভব হবে।
মানুষের মধ্যে ভালোবাসার বন্ধন তৈরি হবে,লাশ হতে হবে না কোন নববধূ।
সমাজে শান্তি আনয়নে গণিপাড়া সমাজ উন্নয়ন পরিষদের কার্যক্রম সকল সমাজের জন্য আর্দশ হউক এই আশা ব্যক্ত করছি।
লেখক: আহমেদ হানিফ; শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।