অজু শেষে যে দোয়া পড়লে জান্নাতের দরজা খুলে যায়

:: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ::
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

পবিত্রতা ইসলামের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। পবিত্রতা ছাড়া নামাজ শুদ্ধ হয় না। আবার খোদ মহান রাব্বুল আলামিনও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন (সুরা তাওবা, আয়াত: ১০৮)। এ ক্ষেত্রে পবিত্রতা অর্জনে গোসলের পরেই অজুর অবস্থান। বিভিন্ন হাদিসে এর বিশেষ ফজিলতের কথাও এসেছে।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন- যখন কোনো মুসলিম অথবা মুমিন বান্দা অজু করে আর সে তার মুখ ধৌত করে, তখন অজুর পানি অথবা অজুর পানির শেষ ফোটার সঙ্গে সঙ্গে তার চেহারা থেকে সব গুনাহ বের হয়ে যায়। যা সে তার দু’চোখ দিয়ে দেখেছিল। আর যখন সে তার দু’হাত ধৌত করে তখন অজুর পানি বা অজুর পানির শেষ ফোটার সঙ্গে সঙ্গে তার উভয় হাত থেকে সকল গুনাহ বের হয়ে যায়, যা সে হাত দিয়ে ধরেছিল, এমনকি শেষ পর্যন্ত সে তার গুনাহ থেকে পাক হয়ে যায়। (তিরমিজী, হাদিস: ২, সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৭০)
এ ক্ষেত্রে অজুর সময় তাড়াহুড়াতেও নিষেধ রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) এক সফরে আমাদের পেছনে ছিলেন। পরে তিনি যখন আমাদের কাছে পৌঁছান তখন আমরা আসরের সালাত (নামাজ) শুরু করতে দেরি করে ফেলেছিলাম। তাই আমরা তাড়াতাড়ি অজু করছিলাম এবং আমাদের পা মাসেহ করার মতো হালকা ভাবে ধুয়ে নিচ্ছিলাম। তখন রাসুল (সা.) উচ্চস্বরে বললেন- `পায়ের গোড়ালির জন্য জাহান্নামের আযাব রয়েছে।‘ তিনি দুইবার অথবা তিনবার এ কথা বললেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৬৪)
তবে এমন একটি দোয়া রয়েছে যেটি অজু শেষে পাঠ করলে জান্নাতের সব দরজা খুলে যায়। উমর ইবনু খাত্তাব (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তি যদি খুব ভালো করে অজু করে নিচের দোয়াটি পড়ে, তবে জান্নাতের সব দরজাই তার জন্য খুলে যাবে এবং যে দরজা দিয়ে সে ইচ্ছা করবে সেটি দিয়েই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। দোয়াটি হলো-
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ
উচ্চারণ: আশহাদুআল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশআদুআন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহু, আল্লাহুম্মা জা‘আলনি মিনাত তাওয়াবিনা ওয়া জা‘আলনি মিনাল-মুতাতাহ্যিরিনা।
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি এক, তাঁর কেউ শরিক নেই। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসুল। হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের মধ্যে শামিল করুন এবং পবিত্রদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (তিরমিজী, হাদিস: ৫৫) মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেন আমাদেরকে উপরোক্ত আলোচনা গুলোর প্রতি গুরুত্ব সহকারে বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করেন, আমিন।

লেখক: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট।

 


[প্রিয় পাঠক, পাবলিক রিঅ্যাকশনের প্রায় প্রতিটি বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। আপনার অনুভূতির কথা আমাদের লিখে পাঠান। ছবিসহ মেইল করুন opinion2mail@gmail.com এই ঠিকানায়। যে কোনো খবর, ভ্রমণ, আড্ডা, গল্প, স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। পাঠকের লেখা আমাদের কাছে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ।]