এডিসি হারুনকে একদিনে দুবার বদলি, নেপথ্যে কি

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট
প্রকাশ: ১ বছর আগে

ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে থানায় ধরে নিয়ে বেধড়ক পিটুনির ঘটনায় রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে একদিনে দুইবার বদলি করা হলো। প্রথমে ডিএমপির এক আদেশে তাঁকে রমনা বিভাগ থেকে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) উত্তর বিভাগে বদলি করা হয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, হারুন-অর-রশীদকে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্বভার অর্পণ করবেন।

অন্যথায় ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন।

এর আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম ও বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহম্মেদ মুনীমকে শাহবাগ থানার ভেতরে ঢুকিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে।

আহতদের একজন হাসপাতালে ভর্তি, অন্যজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার জেরে মধ্যরাতে শাহবাগ থানার সামনে ভিড় করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সকাল থেকে ফেসবুকে এ দুই ছাত্রলীগ নেতার ছবি দিয়ে প্রতিবাদ করছেন সাধারণ কর্মীরা। তবে ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কোনো নেতা।

ঘটনার নেপথ্যে:
অনুসন্ধানে দেখা গেছে নারীঘটিত একটি সূত্র ধরে শনিবার রাতের ঘটনা ঘটে। এডিসি হারুন পুলিশ ক্যাডারের অন্য এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন- এমন তথ্য পেয়ে ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে এসেছিলেন। এ বিষয়ে কথাকাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাদের শাহবাগ থানায় নিয়ে পেটানো হয়।

পেটানোর এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর করে আহত করার ছবি প্রকাশ হলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নির্যাতনের চিত্র দেখে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হন। তারা ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেন। যে নারী কর্মকর্তাকে নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত সেই নারীর স্বামী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং তিনি প্রেসিডেন্টের এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মারধরের ঘটনায় আহতরা বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হারুনের বর্বরতার শিকার দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম।

জানা গেছে, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের এক কর্মকর্তার স্ত্রীর (৩৩তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডার) সঙ্গে এডিসি হারুনের ঘনিষ্ঠতা থেকে ঘটনার সূত্রপাত। হারুন নিজেও ৩১তম বিসিএসের পুলিশ কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন ধরে হারুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে প্রশাসন ক্যাডারের ওই কর্মকর্তার সঙ্গে স্ত্রীর দূরত্ব বাড়তে থাকে। বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে বেশ কয়েকবার মিটমাট করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু এডিসি হারুন সরে না আসায় কোনো সুরাহা হয়নি।

সর্বশেষ শনিবার রাতে বারডেমে হারুনের সঙ্গে স্ত্রী আড্ডা দিচ্ছেন- এমন খবরে ছাত্রলীগের নেতা আনোয়ার হোসেন নাঈম শরীফ আহমেদ মুনিমকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান প্রশাসন ক্যাডারের ওই কর্মকর্তা। এ সময় হারুনের সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগের দুই নেতাও এতে জড়িয়ে যান। এ সময় তারা হারুনের ওপর চড়াও হলে তিনি শাহবাগ থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি দল সেখান থেকে ছাত্রলীগের এক নেতাকে থানায় ধরে নিয়ে যান। পরে অন্য নেতা সেখানে যান। এরপর থানায় ওসির কক্ষে তাদের ওপর চালানো হয় বর্বর নির্যাতন। হারুন নিজেও মারধরে অংশ নেন বলে জানা গেছে। এলোপাতাড়ি মারে অনেকটা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন নাইম। নির্যাতনে নাঈমের বেশ কয়েকটি দাঁতও পড়ে যায়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাদের রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নাঈম চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে মুনিমের চিকিৎসার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

এদিকে দুই শীর্ষ নেতাকে মারধরের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হতে শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বন্ধ করে দেয়া হয় শাহবাগ থানার গেইট। একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান শাহবাগ থানায় উপস্থিত হন। সেখানে আসেন রমনার ডিসিও। এরপর তিন পক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষে ঘটনার তাৎক্ষণিক মীমাংসা হয়ে যায়। মীমাংসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ উগড়ে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অদক্ষ নেতৃত্বকে দায়ী করেন। দাবি উঠে অবিলম্বে এডিসি হারুনের চাকরিচ্যুতির।

ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন নাঈম বলেন, বারডেম হাসপাতালে প্রেসিডেন্টের এপিএস আজিজুল হক খান মামুন ভাইয়ের সঙ্গে এডিসি হারুন অর রশিদের কথা কাটাকাটি হতে দেখি। তখন আমরা বিষয়টা মীমাংসা করার চেষ্টা করি। হঠাৎ এডিসি হারুন ১০-১৫ জন পুলিশ নিয়ে আসেন সেখানে। এরপর তিনি মামুন ভাই ও আমাদের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিরকে মারতে মারতে তারা শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। ৫ মিনিট পর আমি শাহবাগ থানা গেলে হারুনের নির্দেশে ওসির রুমে ১০ থেকে ১৫ জন এসআই, কনস্টেবল আমার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালায়। কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে আমার সারা শরীরে। এরপর আমি আর কিছু মনে করতে পারছি না। তিনি বলেন, থানা হচ্ছে মানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। কিন্তু সেখানে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করা হয়েছে। আমি পরিচয় দেয়ার পর তারা আমাকে মারতে থাকে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। তার চাকরিচ্যুতি চাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং রমনার ডিসি এ ঘটনায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন কিন্তু আমি তাতে ভরসা পাচ্ছি না। ছাত্রলীগ এতিমদের সংগঠন আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাচ্ছি।

আহত আনোয়ার হোসেন নাঈমের মা নাজমুন নাহার বলেন, আমার ছেলেকে মেরে ফেলার জন্যই তো নিছিলো। থানা হলো নিরাপত্তার জায়গা। ওই থানায় নিয়ে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন লোক আমার ছেলেকে কেন এইভাবে মারলো? সে তো তার পরিচয় সব দিলো তার পর তারা চিনেও এইভাবে মারলো। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটার বিচার চাই।
ঘটনার বিষয়ে জানতে ৩১তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা আজিজুল হকের সঙ্গে। টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তা এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এদিকে এ ঘটনায় গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। এ সময় তারা মন্ত্রীর কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, এটা যে করেছে সে অন্যায় করেছে। কেন এই কাজ করেছে, কী কারণে করেছে, তার এই কর্মকা-ের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। আমরা এই ঘটনা জানতে পেরেছি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। সে যতটুকু অন্যায় করেছে তার শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

এডিসি হারুনের মারধরের শিকার হয়েছেন অনেকে:
এডিসি হারুনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার মধ্যে ছিল শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও রয়েছে হাইকোর্ট ও জাতীয় প্রেস ক্লাব। প্রেস ক্লাব ও শাহবাগ মোড়ে প্রায়ই বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, দাবি আদায়, সড়ক অবরোধ, মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালিত হয়। অনেক কর্মসূচিতে তিনি আন্দোলনকারীদের পিটিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। আন্দোলন-কর্মসূচিতে তিনি বরাবরই উগ্র আচরণ করেন। আন্দোলন-বিক্ষোভকারীদের ওপর অমানবিকভাবে লাঠিপেটা করেন। এসব দৃশ্য ধারণ করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক তার মারধরের শিকার হয়েছেন। আর লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা অহরহ। তার লাঞ্ছনার শিকার হওয়া থেকে বাদ যায়নি খোদ পুলিশ সদস্যরাও। অমানবিকভাবে মানুষ পেটানোর ঘটনায় দেশজুড়ে অনেক আলোচনার জন্ম দিলেও কখনো তিনি শাস্তির মুখে পড়েননি।

এর আগে গত বছরের ৪ঠা মার্চ গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা ক্লাবের সামনে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও সাদা পোশাকের লোক বিক্ষোভকারীদের ওপর অতর্কিত লাঠিচার্জ করে। ওইদিন হারুন নিজেই বিক্ষোভকারীদের পেটাতে পেটাতে গলা টিপে ধরেন। পুলিশের ওই হামলায় গণঅধিকার পরিষদের অনেকেই আহত হয়েছিলেন।

গত বছরের ১৮ই এপ্রিল রাতে নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক, বিক্রেতা ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের দিকে রাবারের বুলেট ছুড়তে এক কনস্টেবলকে নির্দেশ দেন তিনি। এ সময় ওই কনস্টেবল জানান বুলেট শেষ হয়ে গেছে। এ কথা শোনার পর পরই হারুন ওই কনস্টেবলকে থাপ্পড় মারেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন হারুন।

গত বছরের ৭ই আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শাহবাগে একটি সমাবেশ করেছিল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেদিনের শান্তিপূর্ণ ওই কর্মসূচিতে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে আহত হন শিক্ষার্থী মো. সুলাইমান মিয়া, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর ঢাবি সংগঠক সামি আবদুল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের স্কুল বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস বাঁধন, ছাত্র ইউনিয়নের বৃহত্তর লালবাগ থানা আহ্বায়ক শান্তা ইসলামসহ ১২ জন। এ ঘটনায় সামি আবদুল্লাহ মারাত্মকভাবে আহত হন। তার মাথায় ১৪টি সেলাই লেগেছিল। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও আহতরা ওই সময় অভিযোগ করে বলেছিলেন, তারা শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করছিল। কিন্তু এডিসি হারুন সে সময় অতর্কিতভাবে লাঠিপেটা করেন।

গত বছরের ৯ই সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগ মোড়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন একদল চাকরিপ্রার্থী। পরে আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে আহত হন অন্তত ১০ জন। আহত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সেদিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, একদল শিক্ষার্থী শাহবাগ মোড়ের চতুর্দিকের রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছিল। এ সময় তারা সরকারকে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী চাকরির বয়স বাড়ানোর দাবি জানায়। পরে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে শুরু হয় লাঠিচার্জ। প্রায় আধাঘণ্টা লাঠিচার্জ করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। এ সময় ছবি তুলতে গেলে ফটো সাংবাদিকদের সঙ্গে হারুন দুর্ব্যবহার করেন। তিনি তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন।

২০২১ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে বিচার চেয়ে শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও অন্যান্য বাম সংগঠন আয়োজিত মশাল মিছিলে লাঠিপেটা করে পুলিশ। সেদিন বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে টিএসসি থেকে শাহবাগে যাচ্ছিলেন, এমন সময় এডিসি হারুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মারধর করে আহত করেন। একই বছরের ১৫ই মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগ পরিবর্তন ইউনিট বহাল, গুচ্ছ সিলেকশন বাতিল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পূর্বের জিপিএ বহাল রাখার দাবিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিপেটার নির্দেশ দেন এডিসি হারুন। তিনি নিজেও শিক্ষার্থীদের লাঠি দিয়ে পেটান।