অনেক বছর পর রাজনৈতিক কর্মসূচীতে ঢাকায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

:: পা.রি. রিপোর্ট ::
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

সরকার হটানোর এক দফা দাবিতে রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে দলটির নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। কর্মসূচির অনুমতি না থাকায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। ধোলাইখাল, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, মাতুয়াইলসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের অনেকেই আহত হন। গাবতলীতে ২০, ধোলাইখালে ৭ এবং চিটাগাং রোডে ৪ জন আটক হয়েছে। এ সময় যাত্রীবাহী দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বদেশ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন লাগে। এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া, মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় আরেকটি যাত্রীবাহী আরেকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে মাতুয়াইলে একটি যাত্রীবাহী বাস, মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় আরেকটি বাসে আগুন লাগার খবর পাই। আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কারা অগ্নিসংযোগ করেছে বা ঘটনায় কোনো হতাহত আছে কি না, এ তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে পুলিশ। বিএনপি নেতাকর্মীরাও ইট-পাটকেল ছুঁড়েছেন।

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাতুয়াইল মেডিকেল এলাকায় দুপুর ১টার দিকে শ্রাবণ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে কিছুক্ষণের মধ্যে বাসের আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এতে বাসটি পুরো পুড়ে যায়নি।

সংঘর্ষের কারণে বিভিন্ন গন্তব্যে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর ব্যস্ত এ মহাসড়কে দুপুর ১টার পর যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।

এ সময় মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও যুবদল নেতা সাগর প্রধানসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশের অবস্থান। ছবি: সংগৃহীত

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা পুলিশের শাফিউল ইসলাম নামে এক কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (২৯ জুলাই) সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলার কথা রয়েছে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়েই নগরীর প্রবেশ পথের বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে রাজধানীর নয়াবাজার, গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি। সব পয়েন্টেই জলকামানসহ ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি ছিল সকাল থেকেই।

পুলিশ জানিয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত তারা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজকে দুই দলের কাউকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়া হয়নি। তাই, কাউকেই কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হবে না। জননিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটনায় এমন কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করলে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমন কর্মসূচির কারণে রাজধানীতে প্রবেশে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ। ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মেহেদি হাসান জানান, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই অবস্থান নিয়েছেন তারা। পুলিশের অনুমতি ছাড়া কোনো দলই কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারবে না।